লিচু গাছে মুকুল আসা থেকে শুরু করে ফল ধরা পর্যন্ত পরিচর্যা করতে হয়। লিচু গাছে মুকুল আসার আগ থেকে ফল আসা পর্যন্ত প্রায় ৩ মাস সঠিক পরিচর্যা করলে লিচুর ভালো ফলন পাওয়া যায়।
পরিচর্যা বলতে গাছের খাদ্য যোগান দেওয়া। লিচু গাছের যথাযথ বৃদ্ধি ও ভালো ফলনের জন্য সঠিক নিয়মে ও পরিমাণমতো সার প্রয়োগ করা জরুরি। নিম্নে সারের পরিমাণ উল্লেখ করা হলো-
গাছের যথাযথ বৃদ্ধি ও ভালো ফলনের জন্য সঠিক নিয়মে ও পরিমাণমতো সার প্রয়োগ করা জরুরি। নিম্নে সারের পরিমাণ উল্লেখ করা হলো-
উল্লিখিত সার বছরে ৩ কিস্তিতে লিচু গাছে প্রয়োগ করতে হবে। ১ম কিস্তি বর্ষার শুরুতে ( ফল আহরণের পর ), ২য় কিস্তি বর্ষার শেষে ( আশ্বিন- কার্তিক মাসে ) এবং শেষ কিস্তি গাছে ফুল আসার পর প্রয়োগ করতে হবে।
নিয়মিত সেচ প্রদান করতে হবে। মাটির ধরণ অনুসারে খরার সময় ১০-১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। গাছে মুকুল আসার আগে ১ বার, গাছে যখন ফল মটরদানার সমান হবে তখন ১ বার এবং মার্বেল আকার ধারণ করলে ১ বার প্লানোফিক্স ( ১ মিলি/৪.৫ লিটার পানি)/মিরাকুলান (১ মিলি/ লিটার পানি)/ফ্লোরা ( ২ মিলি/লিটার পানিতে ) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
লিচু গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে ম্যাম্বডাসাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কোনো কীটনাশক ( ফাইটার/ ফাইটার প্লাস/ রীভা ২.৫ ইসি) ১ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া কার্বেন্ডাজিম জাতীয় একটি ছত্রাকনাশক (আটোস্টিন/নোইন/বেনডাজিম ২ গ্রাম/লিটার পানি/এমকোজিম ১ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
একই সময় ফ্লোরা ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে। লিচু গুটি বা মটরদানার সমান হলে একইভাবে উল্লিখিত কীটনাশক, ছত্রাকনাশক এবং পিজিআর ( PGR ) আরেক বার গাছে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট ১০ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৩ সপ্তাহ পর পর গাছে স্প্রে করলে গাছে ফল ফাটা ও ফল ঝরা সমস্যা দূর হওয়াসহ এবং ফলের আকৃতিও বড় হয়।
লিচুর পোকামাকড়ঃ
লিচুর ফল ছিদ্রকারী পোকার (Litchi Fruit Borer) লক্ষণ:
এই পোকা লিচুর বোটার কাছে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে এবং বীজকে আক্রমণ করে।
পরবর্তীতে ছিদ্রের মুখে বাদামি রঙের এক ধরনের করাতের গুড়ার মতো মিহি গুড়া উৎপন্ন করে। এর ফলে লিচু নষ্ট হয়ে বাজার মূল্য কমে যায়।
প্রতিকারঃ
বাগান নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রন্ত ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলতে হবে। বোম্বাই জাতের লিচুতে এ পোকার আক্রমণ বেশি হয় বিধায় আক্রমণ প্রবণ এলাকাতে চায়না-৩ জাত লাগাতে হবে। নিমের তেল বা বাইকা ২ মিলি/লিটার পানিতে গুলে গাছে স্প্রে করা যেতে পারে। আক্রমণ বেশি হলে সাইপারমেথ্রিন ( রেলোথ্রিন/ রিপকট/ কট/সিমবুশ/ডেসিস ) ১ মিলি/লিটার পানি বা লিবাসিড ২ মিলি/লি পানিতে ডায়াজিনন বা সুমিথিয়ন ২ গ্রাম/ লি পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
লিচু গাছে মুকুল আসা থেকে ফল ধরা পর্যন্ত পরিচর্যা বিষয়ে তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোছা: উম্মে সালমা জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা রাজশাহী।