ডায়েট নিয়ে বহু ভ্রান্ত ধারণাও প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা যায় এমন ৫টি ভুল ধারণার কথা জানিয়ে দিচ্ছে টনিক।
“ভাত খাওয়া মানা”
বাঙালি ভাত খাবে না তা কি হয়? কিন্তু যখনই আপনি ওজন কমানোর জন্য একটি বিশেষ ডায়েট অনুসরণ করা শুরু করবেন, কেউ না কেউ আপনাকে বলবেই, ভাত খাওয়া কিন্তু একদম চলবে না । পুষ্টিবিদদের মতে, ভাত এবং শস্যজাতীয় যে কোনো খাবার শরীরের জন্য শক্তির উৎস। দীর্ঘদিন ধরে যারা ভাত কিংবা রুটি খেয়ে এসেছেন, হঠাৎ করে তা খাওয়া বন্ধ করে দিলে শরীরের উপকারের বদলে ক্ষতিই হবে।
তবে খেতে হবে হিসেব করে। বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, রাতে কম খাওয়ার সঙ্গে ওজন কমানোর কোনো সম্পর্ক নেই। দিনের মধ্যে কখন আপনি খাচ্ছেন তা বড় কথা নয়, যদি খাওয়ার পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রমও হয়।
“চর্বিযুক্ত খাবার নয়”
হ্যাঁ, ডুবো তেলে ভাজা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিংবা পিঁয়াজু আপনার মেদ বাড়াবেই। তবে অন্য উপাদানের মতো দেহে খানিকটা চর্বিরও প্রয়োজন রয়েছে।
স্বাস্থ্যকর স্নেহজাতীয় খাবার আমাদের হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফাস্টফুড না খেয়ে, খেতে পারেন এক মুঠো বাদাম, একটু পনির, মিষ্টি দই, আস্ত ডিম কিংবা মাছের তেল। এসব খাবারে থাকা ফ্যাট আপনার শরীরের উপকারই করবে।
“ওজন কমবে রাতারাতি”
‘এই বড়ি খেলে ওজন কমবে জাদুর মতো’ কিংবা ‘এই ডায়েট প্ল্যান আপনার জীবন বদলে দেবে’—এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রায়ই চোখে পড়ে। কিন্তু এগুলো কতোটা স্বাস্থ্যকর?
রাতারাতি ওজন কমানো মানব দেহের পক্ষে সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যখনই শর্টকাটের কথা বলা হবে, বুঝবেন এই পন্থা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। সঠিক উপায়ে ওজন কমাতে হলে ধৈর্য্য ধরা খুবই প্রয়োজন।
“আদর্শ স্বাস্থ্যের জন্য ডিটক্স”
বিশেষ ঔষধ বা পানীয় পান করে অনেকেই দেহকে ডিটক্স করেন বা দেহের ভেতরে জমে যাওয়া বিষাক্ত পদার্থ পরিশোধন করার চেষ্টা করেন। অনেকে মনে করেন ছুটির দিনে উল্টো-পাল্টা খেয়ে ফেললে এসব ঔষধ বা পানীয়ের সাহায্যে দেহে জমে যাওয়া বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয়া যাবে। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
পুষ্টিবিদদের মতে, আমাদের ফুসফুস, কিডনি এবং যকৃৎ প্রাকৃতিকভাবে পরিশোধন করার ক্ষমতা রাখে। এখন আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, অ্যালকোহল এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খেতে হবে।
“ আগের আর পরের ছবি দেখেই বুঝবেন কতোটা পরিবর্তন হয়েছে!”
আগে এবং পরের ছবি নিয়ে বানানো ওজন কমানোর নানা ধরনের বিজ্ঞাপন অহরহই চোখে পড়ে। ওজন কমানোর ঔষধ বা ডায়েট প্ল্যান বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানি এসব ভুয়া ছবি ব্যবহার করে, যা দেখে লোকে বিশ্বাসও করে বসে।
পুষ্টিবিদরা বলেন, এসব ছবি দেখে অনেকের চোখ চকচক করে উঠলেও এগুলোর বেশিরভাগের পেছনে থাকে ফটোশপের কারসাজি। গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতেই সুন্দর এবং ছিমছাম গড়নের নারী-পুরুষদের ছবি ব্যবহার করা হয়।
ওজন কমানোর জন্য বিশেষ কোনো খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে চাইলে পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের সাহায্য নিন। একজন বিশেষজ্ঞই আপনাকে বাতলে দেবেন সঠিক পন্থাটি।
এই আর্টিকেলটি আপনার কাজে লাগলে আপনার বন্ধুর সঙ্গে #mytonic লিখে শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন।